কানাডায় বহু বছর ধরে স্থায়ী বাসিন্দারা বাবা-মা ও দাদা-দাদিকে স্পনসর করে স্থায়ী বসবাসের (পিআর) অনুমতি নিতে পারতেন। তবে এই বহুল জনপ্রিয় সুযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। কানাডার অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলারের নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, বিদ্যমান আবেদনের ব্যাকলগ সমাধানের লক্ষ্যে নতুন আবেদন গ্রহণ বন্ধ রাখা হয়েছে।
কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী ও নাগরিকত্ব বিভাগ (আইআরসিসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চলতি বছরে বাবা-মা ও দাদা-দাদির জন্য স্থায়ী বসবাসের স্পনসরশিপের আওতায় নতুন আবেদন গ্রহণ করা হবে না। ২০২৪ সালে জমা দেওয়া আবেদনগুলো প্রক্রিয়াকরণ চলবে, তবে নতুন কোনও আবেদন নেওয়া হবে না।
এই সিদ্ধান্তের ফলে কানাডার অনেক অভিবাসী পরিবার, বিশেষত বাংলাদেশি পরিবারেরাও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। অতীতে পিজিপি কর্মসূচির আওতায় স্থায়ী বাসিন্দারা তাদের বাবা-মা এবং দাদা-দাদিকে স্থায়ীভাবে কানাডায় নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেতেন।
পিজিপি কর্মসূচির পরিবর্তে পরিবারগুলোকে সুপার ভিসা কর্মসূচি বিবেচনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই ভিসার মাধ্যমে বাবা-মা এবং দাদা-দাদি কানাডায় টানা পাঁচ বছর পর্যন্ত থাকার অনুমতি পাবেন। এটি পিজিপি’র তুলনায় স্থায়ী সমাধান না হলেও আপাতত এটিই একমাত্র বিকল্প।
কানাডা ঐতিহাসিকভাবে অভিবাসীবান্ধব দেশ হিসেবে পরিচিত। তবে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর প্রশাসন অভিবাসনের ওপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে কঠোর নীতি গ্রহণ করেছে। দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি কানাডার আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।
কানাডা গেজেটের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চলতি বছরে পিআর কোটা কমিয়ে ৩ লাখ ৯৫ হাজার করা হয়েছে, যা ২০২৬ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার এবং ২০২৭ সালে ৩ লাখ ৬৫ হাজারে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
২০২৫ সালে শুধুমাত্র পারিবারিক স্পনসরশিপের জন্য ৯৪ হাজার ৫০০টি ভিসা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৭০ হাজার ভিসা পিআর-ধারীদের স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
কানাডার কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে ১২ লাখেরও বেশি অস্থায়ী বাসিন্দা দেশটি ছেড়ে যেতে বাধ্য হতে পারেন। এই নীতি কানাডার অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরও কঠোর করার পাশাপাশি নতুন অভিবাসীদের জন্য সীমিত সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।