ডোনাল্ড জে. ট্রাম্পের জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৪ জুন, নিউইয়র্কের কুইন্সে। ধনকুবের পরিবারে জন্ম নেওয়া ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বিশেষ পরিচিতি পান ২০১৭ সালে, যখন তিনি ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। ২০২৪ সালে তিনি পুনরায় ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
ট্রাম্পের বাবা ফ্রেড ট্রাম্প নিউইয়র্কের আবাসন ব্যবসায়ী ছিলেন, আর মা মেরি ট্রাম্প ছিলেন স্কটিশ বংশোদ্ভূত। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে ট্রাম্প ছিলেন চতুর্থ। ছোটবেলা থেকেই চঞ্চল স্বভাবের কারণে তাঁকে নিউইয়র্ক মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করা হয়। ১৯৬৮ সালে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ারটন স্কুল থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
স্নাতক শেষে বাবার ব্যবসায় যোগ দিয়ে ট্রাম্প ধীরে ধীরে হোটেল, গলফ কোর্স, বহুতল ভবন এবং ক্যাসিনো ব্যবসায় যুক্ত হন। ব্যবসায়িক খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি তিনি জনপ্রিয় টিভি শো দ্য অ্যাপ্রেনটিস এর মাধ্যমে শোবিজ দুনিয়ায় সেলিব্রিটি হয়ে ওঠেন।
রাজনীতিতে আগমন
ট্রাম্পের রাজনৈতিক যাত্রা ২০১৫ সালে শুরু হয়, যখন তিনি আচমকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। প্রথমে অনেকেই তাঁর প্রার্থিতাকে গুরুত্ব দেননি। কিন্তু ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করে ট্রাম্প প্রমাণ করেন তিনি কেবল ধনকুবের বা টিভি তারকা নন, একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদও।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তিনবার বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী চেক মডেল ইভানা ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয় ১৯৯২ সালে। এরপর মার্লা ম্যাপলসের সঙ্গে ১৯৯৩ সালে বিয়ে এবং ১৯৯৯ সালে বিচ্ছেদ ঘটে। তৃতীয় স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প একজন মডেল, যিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি। ট্রাম্প পাঁচ সন্তানের পিতা।
ট্রাম্প সব সময় আলোচনার কেন্দ্রে থাকতে পছন্দ করেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তাঁর অভিবাসননীতি, মুসলিম নিষেধাজ্ঞা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নারী অধিকার নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য সমালোচনার ঝড় তোলে। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগও ওঠে। নির্বাচনে জয়লাভের পর রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়েও তদন্ত শুরু হয়।
ট্রাম্পের প্রশাসন তাঁর নির্বাহী আদেশ এবং বিতর্কিত নীতির জন্য বেশ সমালোচিত হয়েছে। মুসলিম নিষেধাজ্ঞাসহ বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশ আদালতে বাধার সম্মুখীন হয়। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনে ট্রাম্প প্রায়শই চাপের মুখে পড়েন। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বারবার পদত্যাগের কারণে তাঁর নেতৃত্বে অস্থিরতা দেখা দেয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব, যিনি জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। ধনকুবের থেকে শোবিজ তারকা, সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট—ট্রাম্পের জীবন এক অনন্য ও বিতর্কমুখর অধ্যায়।