ভিসা ছাড়া শুধুমাত্র বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকলেই যেতে পারবেন যে দেশগুলতে

বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে। চলতি বছরে বিশ্বের ২১টি দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করার সুযোগ পাবেন বাংলাদেশের নাগরিকরা।

বিশ্বব্যাপী ভিসা প্রক্রিয়ার জটিলতা ও অব্যবস্থাপনা দীর্ঘদিন ধরেই ভ্রমণপিপাসুদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত থেকে শুরু করে অনুমোদনের অপেক্ষা—সবই ভ্রমণকারীদের জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। তবে নির্দিষ্ট কিছু দেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের আর এই জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে না।

বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত দেশের তালিকা

২০২৪ সালের ভিসামুক্ত ভ্রমণ সূচকে লেসোথো দেশের নাম আর অন্তর্ভুক্ত নেই। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশটিতে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের এখন থেকে ভ্রমণের আগে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে এবং নির্ধারিত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অনুমোদন নিতে হবে।

তবে ভিসামুক্ত তালিকার বাকি ২১টি দেশের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। তালিকায় নতুন কোনো দেশ যোগ হয়নি এবং পূর্বের দেশগুলোর ক্ষেত্রেও কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

ভিসামুক্ত ভ্রমণ নীতিমালার আওতায় বিদেশ যাত্রায় কোনো ধরনের কাগুজে বা ডিজিটাল অনুমতিপত্র দেখানোর প্রয়োজন হয় না। এমনকি এতে ভিসা ফি দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও থাকে না। ভ্রমণের একমাত্র প্রয়োজনীয় নথি হিসেবে পাসপোর্টই যথেষ্ট। তবে গন্তব্য দেশের অভ্যন্তরে অবস্থানের জন্য সাধারণত নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়, যা দেশ ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে।

২০২৫ সালে অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুবিধা পাবেন ১৬টি দেশে

বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য ২০২৫ সালে অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুবিধা বহাল থাকছে ১৬টি দেশে। এই অভিবাসন নীতির অধীনে বিদেশ ভ্রমণকারীরা গন্তব্য দেশে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর বা স্থলবন্দরে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন।

অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধায় দেশে প্রবেশের অনুমতি ছাড়াও সেখানে থাকার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত থাকে। এটি একেক দেশে একেক রকম হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ভিসা বিনামূল্যে প্রদান করা হয়, তবে কিছু কিছু দেশে এর জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হয়।

হেনলি পাসপোর্ট ইন্ডেক্স ২০২৫-এর তথ্য অনুযায়ী, অন-অ্যারাইভাল ভিসার এই সুবিধা বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের আন্তর্জাতিক যোগাযোগকে আরও সহজ করবে। তবে ভ্রমণের আগে প্রত্যেক দেশের শর্ত এবং মেয়াদ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া জরুরি।

দেশগুলোর তালিকা নিম্নরূপ:

২০২৪ সালেএই সংখ্যাটি ছিল ১৮। এবার এই ক্যাটাগরিতে নেই সেশেলস ও টোগো।

যে দেশগুলো ই-ভিসার সুবিধা দিচ্ছে

ই-ভিসা সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি ভ্রমণের উদ্দেশ্যে, যেমন পড়াশোনা, চাকরি বা ব্যবসার জন্য ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে, ইটিএ মূলত স্বল্পমেয়াদি ভ্রমণ, যেমন পর্যটন বা ট্রানজিটের জন্য উপযুক্ত।

বাংলাদেশিদের ই-ভিসা দেওয়া দেশের তালিকা

ইটিএ (ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন)

ইটিএ দিয়ে ভ্রমন করা যাবে ৩ দেশে

হেনলি ইনডেক্সের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসামুক্ত ভ্রমণ গন্তব্যের সংখ্যা কমে এসেছে। চলতি বছরে ভিসামুক্ত, অন-অ্যারাইভাল এবং ইটিএ-সহ (ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন) গন্তব্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০-এ, যা গত বছর ছিল ৪২।

এই পরিবর্তনের ফলে হেনলি ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৭ থেকে নেমে ১০০তে পৌঁছেছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে বাংলাদেশি পাসপোর্টের অবস্থান সর্বনিম্ন মাত্রায় ছিল। তবে পরবর্তী তিন বছরে ধীরে ধীরে উন্নতি হয়েছিল। চলতি বছরের এই অবনতি আবারও বাংলাদেশি পাসপোর্টের মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

বিশ্বব্যাপী ভিসামুক্ত ভ্রমণের সুবিধা একটি দেশের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও কূটনৈতিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড। তাই এই নিম্নগামী প্রবণতা ভ্রমণপিপাসু ও কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্বেগজনক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *