২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন ২০২৫ ও নীতিমালা প্রকাশিত হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, ৩০ জুলাই থেকে অনলাইনে আবেদন কার্যক্রম শুরু হবে এবং তা চলবে ১১ আগস্ট পর্যন্ত। মূল ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে ৭ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে, আর ক্লাস শুরু হবে ১৫ সেপ্টেম্বর। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এই নীতিমালা প্রকাশ করে।
নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে, যারা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করবে এবং যোগ্য বিবেচিত হবে, তাদেরকেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আবেদন করতে হবে। শিক্ষার্থীর পছন্দক্রম অনুযায়ী অনলাইনে আবেদনগুলোতে অটো মাইগ্রেশন প্রযোজ্য হবে।
আবেদন যাচাই, বাছাই ও নিষ্পত্তি হবে ১২ আগস্ট। শুধুমাত্র পুনঃনিরীক্ষণে ফল পরিবর্তিত শিক্ষার্থীদের আবেদন গ্রহণ করা হবে ১৩ ও ১৪ আগস্ট। পছন্দক্রম পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে ১৫ আগস্ট। ১ম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশিত হবে ২০ আগস্ট রাত ৮টায়।
ফল প্রকাশের পর কলেজ নিশ্চায়ন
নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন করতে হবে ২০ আগস্ট ফল প্রকাশের পর থেকে ২২ আগস্ট রাত ৮টার মধ্যে। নিশ্চায়ন না করলে ১ম পর্যায়ের নির্বাচন ও আবেদন বাতিল হবে এবং পুনরায় আবেদন করতে হবে ফি প্রদান সাপেক্ষে। ২য় পর্যায়ে আবেদন করা যাবে ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট রাত ৮টা পর্যন্ত। পছন্দক্রম অনুযায়ী ১ম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশিত হবে ২৮ আগস্ট রাত ৮টায় এবং একই দিনে ২য় পর্যায়ের আবেদনের ফলও প্রকাশিত হবে।
২য় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নির্বাচন নিশ্চায়ন করতে হবে ২৯ ও ৩০ আগস্ট রাত ৮টা পর্যন্ত (যদি শিক্ষার্থী নিশ্চায়ন না করে, তবে ২য় পর্যায়ের নির্বাচন ও আবেদন বাতিল হয়ে যাবে এবং তাকে পুনরায় ফিসহ আবেদন করতে হবে)। ৩য় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ করা হবে ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত।
পছন্দক্রম অনুযায়ী ২য় মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশিত হবে ৩ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়। একই দিন ৩য় পর্যায়ের আবেদনের ফলও প্রকাশিত হবে। ৩য় পর্যায়ের নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন করতে হবে ৪ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার মধ্যে (নিশ্চায়ন না করলে ৩য় পর্যায়ের নির্বাচন ও আবেদন বাতিল হবে)।
সর্বশেষ মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশিত হবে ৫ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়। ভর্তি কার্যক্রম চলবে ৭ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবং ক্লাস শুরু হবে ১৫ সেপ্টেম্বর। উল্লেখ্য, অনলাইন ব্যতীত ম্যানুয়ালি কোনো ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হবে না।
ভর্তির যোগ্যতা ও বিভাগ নির্বাচনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, যেকোনো শিক্ষাবর্ষে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের খ্রিস্টাব্দ এবং ধারাবাহিকভাবে পূর্ববর্তী দুই খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ড বা বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা নীতিমালার অন্যান্য শর্ত সাপেক্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তি হওয়ার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন।
বিদেশি বোর্ড বা সমমানের যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে, তাদের সনদের মান ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত হওয়ার পর উল্লিখিত শর্ত অনুযায়ী তারা ভর্তি হওয়ার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন।
ভর্তির আবেদনে বিভাগ নির্বাচনের নিয়ম
- বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে আবেদন করতে পারবেন।
- মানবিক বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে আবেদন করতে পারবেন।
- ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় শিক্ষা বা মানবিক বিভাগে আবেদন করতে পারবেন।
যেকোনো বিভাগ (বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা) থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ইসলামী শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও সংগীত বিভাগে আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি: ঢাকার সেরা ২০ কলেজ ও আসন সংখ্যা
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে আবেদন করতে পারবেন এবং সাধারণ ও মুজাব্বিদ মাহির বিভাগ থেকে উত্তীর্ণরা বিজ্ঞান বিভাগ ছাড়া অন্য যেকোনো বিভাগে আবেদন করতে পারবেন।
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের যেকোনো বিভাগে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ভালো কলেজ নির্বাচন এর উপায়
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় কলেজ বাছাই নিয়ে যদি আপনি দ্বিধায় থাকেন, তাহলে সহায়ক হতে পারে এই আর্টিকেলটি। রাজধানীর উচ্চ মাধ্যমিক কলেজগুলোর ওপর ভিত্তি করে এই র্যাঙ্কিং প্রথমবারের মতো প্রকাশ করে দৈনিক শিক্ষাডটকম। এতে ৮৫ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে ‘আইডিয়াল’ বা এ-প্লাস ক্যাটাগরিতে স্থান করে নেয় সাতটি কলেজ। আর ৭৫ থেকে ৮৪ শতাংশ নম্বর অর্জন করে এ ক্যাটাগরিতে জায়গা পেয়েছে ৩৬টি কলেজ। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার আগে এক নজরে দেখে নিন সেই র্যাঙ্কিংয়ের ফলাফল।
এ-প্লাস ও এ ক্যাটাগরির কলেজগুলোর তালিকা
৮৫ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে এ-প্লাস ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে–
- নটর ডেম কলেজ
- ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ
- আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ
- হলিক্রস কলেজ,
- ঢাকা কলেজ
- রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ
- সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
৫-৮৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে এ ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে ৩৬টি কলেজ, যেগুলো হলো:
- ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- সরকারি বাঙলা কলেজ,
- লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ,
- মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ,
- নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ,
- তেজগাঁও কলেজ,
- মিরপুর কলেজ,
- উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- তেজগাঁও আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- হামদর্দ পাবলিক কলেজ,
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি (স্কুল অ্যান্ড কলেজ),
- শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- কবি নজরুল সরকারি কলেজ,
- সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ,
- সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজ,
- উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়,
- ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- বিসিআইসি কলেজ,
- হারুন মোল্লা ডিগ্রি কলেজ,
- মিরপুর বিজ্ঞান কলেজ,
- মিরপুর বাঙলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- আহছানিয়া মিশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- দুয়ারিপাড়া সরকারি কলেজ,
- সরকারি রূপনগর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- গুলশান কমার্স কলেজ,
- ঢাকা সিটি কলেজ,
- ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- হযরত শাহ আলী মহিলা কলেজ,
- লালবাগ সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং
- সিদ্ধেশ্বরী কলেজ।
বি ক্যাটাগরিতে (৬৫-৭৪%) রয়েছে
- উত্তরা ইউনাইটেড কলেজ,
- তেজগাঁও মহিলা কলেজ,
- ঢাকা উইমেন্স কলেজ,
- মাইলস্টোন কলেজ,
- আইডিয়াল কলেজ (ধানমন্ডি),
- সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ,
- আজিমপুর সরকারি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ,
- বশির উদ্দিন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- পল্লবী ডিগ্রি কলেজ,
- সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ,
- সবুজবাগ সরকারি কলেজ,
- হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ,
- আবুজর গিফারি কলেজ,
- আলহাজ্ব মকবুল হোসেন কলেজ,
- রামপুরা একরামুন্নেছা ডিগ্রি কলেজ এবং
- ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজ।
সি ক্যাটাগরিতে (৫০-৬৪%) স্থান পেয়েছে
- পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ,
- খিলগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- নতুন পল্টন লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ,
- এইচ আর মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ,
- হাজি সেলিম ডিগ্রি কলেজ এবং
- ড. মালিকা কলেজ।
এই র্যাঙ্কিং নির্ধারণে কলেজ কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পৃথক প্রশ্নপত্রের ভিত্তিতে সরেজমিনে পরিদর্শন ও বিশ্লেষণ করা হয়। দেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল শিক্ষাবিষয়ক পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম এবং জাতীয় প্রিন্ট শিক্ষাপত্র দৈনিক আমাদের বার্তা এই জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে। জরিপের মূল অংশে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) একদল মেধাবী ও উদ্যমী শিক্ষার্থী।
জরিপে কলেজগুলোর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির হার, পাশের হার ও ফলাফল, ভৌত অবকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত, পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রম, খেলার মাঠ, পাঠাগার, ক্লাব কার্যক্রমসহ মোট ২১টি মানদণ্ডের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মূল্যায়নও নেওয়া হয়েছে।