যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার রাশিয়ার সর্বশেষ আক্রমণের তীব্র সমালোচনা করে একে “অযৌক্তিক” বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই অযৌক্তিক হামলার উদ্দেশ্য ছিল শীতকালে ইউক্রেনের জনগণকে তাপ এবং বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত করা এবং তাদের বিদ্যুৎ গ্রিডের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলা।”
বাইডেন এক বিবৃতিতে আরও বলেন, “ইউক্রেনের জনগণ শান্তি এবং নিরাপত্তায় বসবাস করার অধিকার রাখে। যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে হবে যতক্ষণ না তারা রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জয়ী হয়।”
বুধবার ভোরে রাশিয়া ৭৮টি বিমান ও ভূমি-নিক্ষেপ মিসাইল এবং ১০৬টি শেহেদ ড্রোন ব্যবহার করে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামো ও জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় হামলা চালায় বলে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানায়। এই হামলায় ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়।
ডিটিইকে, ইউক্রেনের বৃহত্তম বেসরকারি জ্বালানি কোম্পানি, জানিয়েছে এটি ছিল ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ওপর রাশিয়ার ১৩তম আক্রমণ।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলাকে “অমানবিক” বলে নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আজ পুতিন ইচ্ছাকৃতভাবে ক্রিসমাসের দিন হামলা চালিয়েছেন। এর চেয়ে অমানবিক আর কী হতে পারে? ৭০টিরও বেশি মিসাইল, যার মধ্যে ব্যালিস্টিক মিসাইল রয়েছে, এবং ১০০টিরও বেশি আক্রমণ ড্রোন। তাদের লক্ষ্য আমাদের জ্বালানি অবকাঠামো। তারা ইউক্রেনে ব্ল্যাকআউট সৃষ্টির জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।”
বাইডেন তার বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ইউক্রেনকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে এবং আরও সরঞ্জাম পথে রয়েছে।
তিনি বলেন, “আমি প্রতিরক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের কার্যক্রম আরও জোরদার করতে। রাশিয়ার বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্র নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।”
অপরদিকে, প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার সমালোচনা করে আসছেন। তিনি কিয়েভ এবং মস্কোর মধ্যে সমঝোতার পক্ষে এবং সংঘাত দ্রুত সমাপ্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নতুন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং চার বছরের মধ্যে প্রথম আলোচনায় সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মনোনীত লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) কিথ কেলোগ ক্রিসমাস দিবসে হামলার নিন্দা জানান।
তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “ক্রিসমাস শান্তির সময় হওয়া উচিত, অথচ ইউক্রেনকে নির্মমভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। প্রভুর জন্মদিনে বড় পরিসরে মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালানো অন্যায়। বিশ্ব উভয় পক্ষের কর্মকাণ্ড গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগের চেয়ে বেশি সংকল্পবদ্ধ।”
সুত্র : দা হিল