বিশ্বের সেরা ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় (Top 10 Universities in the World) সম্পর্কে জানবো আজ। বিশ্বজুড়ে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মান ও গুণগত মূল্যায়নের ভিত্তিতে QS World University Rankings 2025-এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এই বছর র্যাঙ্কিংটি আকারে সর্ববৃহৎ, যেখানে ১০৫টি দেশের প্রতিনিধিত্বে ১,৫০০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় তালিকাভুক্ত হয়েছে। এই তালিকা শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাইয়ে সহায়ক একটি নির্ভরযোগ্য সূচক হিসেবে বিবেচিত।
এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র সর্বাধিক প্রতিনিধিত্বকারী দেশ হিসেবে শীর্ষে রয়েছে—এদেশের ১৯৭টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। এরপর রয়েছে যুক্তরাজ্য, যার ৯০টি প্রতিষ্ঠান তালিকায় রয়েছে, এবং চীন (মেইনল্যান্ড) স্থান পেয়েছে ৭১টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে।
এশিয়া থেকে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবার গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে, বিশেষ করে সিঙ্গাপুর, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া উল্লেখযোগ্য।
বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ ২০২৫
২০২৫ সালের র্যাঙ্কিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের Massachusetts Institute of Technology (MIT) আবারও প্রমাণ করেছে তাদের শীর্ষস্থানীয়তা—তারা টানা ১৩তম বছরের মতো প্রথম স্থান ধরে রেখেছে। অন্যদিকে, Imperial College London চার ধাপ এগিয়ে উঠে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে, যা এই প্রতিষ্ঠানের গবেষণা ও একাডেমিক মানের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি নির্দেশ করে।
University of Oxford রয়েছে তৃতীয় স্থানে, এর পরে Harvard University ও University of Cambridge যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে, যা তাদের শতাব্দী-প্রাচীন শিক্ষার ঐতিহ্য এবং বৈশ্বিক প্রভাবের প্রতিফলন
QS World University Rankings 2025 অনুযায়ী শীর্ষ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়
র্যাঙ্ক | বিশ্ববিদ্যালয় এর নাম | অবস্থান | সামগ্রিক স্কোর |
---|---|---|---|
০১ | Massachusetts Institute of Technology (MIT) | যুক্তরাষ্ট্র | ১০০ |
০২ | Imperial College London | যুক্তরাজ্য | ৯৮.৫ |
০৩ | University of Oxford | যুক্তরাজ্য | ৯৬.৯ |
০৪ | Harvard University | যুক্তরাষ্ট্র | ৯৬.৮ |
০৫ | University of Cambridge | যুক্তরাজ্য | ৯৬.৭ |
০৬ | Stanford University | যুক্তরাষ্ট্র | ৯৬.১ |
০৭ | ETH Zurich – Swiss Federal Institute of Technology | সুইজারল্যান্ড | ৯৩.৯ |
০৮ | National University of Singapore (NUS) | সিঙ্গাপুর | ৯৩.৭ |
০৯ | University College London (UCL) | যুক্তরাজ্য | ৯১.৬ |
১০ | California Institute of Technology (Caltech) | যুক্তরাষ্ট্র | ৯০.৯ |
Massachusetts Institute of Technology (MIT)
বিশ্বের সবচেয়ে নামকরা প্রযুক্তি ও গবেষণাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে MIT দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। ২০২৫ সালের QS World University Rankings-এ তারা টানা ১৩তম বারের মতো প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং গণিত (STEM) ক্ষেত্রকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।
হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গবেষণার ক্ষেত্রে গভীর অংশীদারিত্ব রয়েছে। MIT-এর সবচেয়ে বড় শক্তি হলো এর উদ্ভাবনী সংস্কৃতি ও বাস্তবভিত্তিক সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততা। এখানে রয়েছে অসংখ্য গবেষণাগার, বিশ্বমানের প্রফেসর এবং উদ্যোক্তা তৈরির অনুকূল পরিবেশ।
এটি একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি শিল্প ও উদ্যোক্তা জগতে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। শিক্ষার্থীদের জন্য গুগল, স্পেসএক্স, নাসা, অ্যাপলসহ নামীদামি কোম্পানিতে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে এই বিশ্ববিদ্যালয়, যা একে বিশ্বের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে আলাদা মর্যাদা দেয়।
Imperial College London
যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত গবেষণা-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান Imperial College London ২০২৫ সালে QS র্যাঙ্কিংয়ে চমকপ্রদভাবে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে, যা এর বৈজ্ঞানিক উৎকর্ষতার স্বীকৃতি। এই বিশ্ববিদ্যালয় মূলত বিজ্ঞান, প্রকৌশল, চিকিৎসা এবং ব্যবসায় শিক্ষা ক্ষেত্রের উপর ফোকাস করে।
লন্ডনের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি দারুণ গন্তব্য। ইম্পেরিয়াল কলেজে এমন অনেক গবেষণা প্রকল্প পরিচালিত হয়, যেগুলো আধুনিক চিকিৎসা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও টেকসই প্রযুক্তির অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছে। এখানে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলো সমাধানে দক্ষতা অর্জন করে।
শিক্ষা, গবেষণা এবং শিল্প-সংযোগের এক অপূর্ব সমন্বয়ে ইম্পেরিয়াল কলেজ আজকের বিশ্বে এক অবিচ্ছেদ্য নাম। এটি কেবল একটি বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বরং ভবিষ্যতের বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবকদের নির্মাণশালা।
University of Oxford
ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড প্রায় ১ হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং সারা বিশ্বে সমানভাবে খ্যাতিসম্পন্ন। এই বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ শিক্ষার রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। শিক্ষা, গবেষণা, সাহিত্য, দর্শন, আইন এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান সহ আরো অনেক বিষয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভুমিকা পালন করছে।
এখানে রয়েছে বিশ্বমানের শিক্ষক, গ্রন্থাগার এবং গবেষণাগার। Oxford-এর বিশেষত্ব হলো এর “tutorial system”, যেখানে এক বা দুইজন শিক্ষার্থীকে একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে পাঠদান করেন। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যালামনাই তালিকায় রয়েছেন বহু নোবেল বিজয়ী, বিশ্বনেতা ও বিজ্ঞানী।
প্রতিটি শিক্ষার্থী এখানে শুধু পাঠ গ্রহণ করে না, বরং যুক্তিবোধ, বিশ্লেষণ, লেখন ও নেতৃত্বে দক্ষ হয়ে গড়ে ওঠে। ২০২৫ সালের QS র্যাঙ্কিং অনুযায়ী এটি তৃতীয় স্থানে রয়েছে, যা এর নিরবিচারে মানের প্রমাণ।
Harvard University
Harvard University শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, বরং সারা বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ১৬৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সময়ের সাথে সাথে একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব, গবেষণা, এবং অ্যালামনাই শক্তির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত হয়ে ওঠে।
২০২৫ সালের র্যাঙ্কিংয়ে হার্ভার্ড রয়েছে চতুর্থ স্থানে। হার্ভার্ডে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় একাডেমিক লাইব্রেরি নেটওয়ার্ক, যা শিক্ষার্থীদের গবেষণায় অগ্রসর হতে সহায়তা করে। বিশ্ববিদ্যালয়টি সামাজিক বিজ্ঞান, আইন, ব্যবসা ও চিকিৎসা শিক্ষায় বিশ্বনন্দিত।
এখানকার শিক্ষাব্যবস্থায় থাকে কঠোর একাডেমিক স্ট্যান্ডার্ড, বাস্তব ভিত্তিক শিক্ষা এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার মনোভাব। গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই, ফেসবুকের মার্ক জাকারবার্গসহ বহু নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।
University of Cambridge
University of Cambridge হচ্ছে এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে ইতিহাস, বিজ্ঞান এবং গবেষণা একসাথে মিশে রয়েছে। প্রায় ৮০০ বছরেরও বেশি পুরনো এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। স্টিফেন হকিং, স্যার আইজ্যাক নিউটন, চার্লস ডারউইনের মতো অগণিত বিখ্যাত গবেষক এখানকার প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
কেমব্রিজে রয়েছে ৩০টিরও বেশি স্বায়ত্তশাসিত কলেজ এবং শতাধিক বিভাগ যেখানে উচ্চমানের পাঠদান ও গবেষণা চলে। এখানকার শিক্ষার্থীরা শুধু একাডেমিকভাবে নয়, নৈতিক এবং সৃজনশীল দিক দিয়েও নিজেদের বিকশিত করতে পারে। ২০২৫ সালে QS র্যাঙ্কিং অনুযায়ী এটি বিশ্বের ৫ম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য কেমব্রিজ অন্যাতম জনপ্রিয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের কাছে কেমব্রিজ মানে একটি অনন্য শিক্ষা ও জীবনের অভিজ্ঞতা।
Stanford University
Stanford University ক্যালিফোর্নিয়ার হৃদয়ে অবস্থিত একটি বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যা উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এটি এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে শিক্ষার গুণমান, গবেষণার গভীরতা এবং বাস্তব জীবনের প্রয়োগ একত্রে মিলিত হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সেরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা
স্ট্যানফোর্ডের ক্যাম্পাস বিশ্বের বৃহত্তম একাডেমিক ক্যাম্পাসগুলোর মধ্যে একটি এবং এখানকার শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ের জ্ঞানেই সীমাবদ্ধ থাকে না—তারা গবেষণা, উদ্ভাবন এবং উদ্যোগ গঠনের ক্ষেত্রেও নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। গুগল, ইয়াহু, হিউলেট-প্যাকার্ডের মতো বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলোর শুরু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতেই।
QS World University Rankings 2025 অনুযায়ী এটি বিশ্বের ষষ্ঠ সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। তথ্যপ্রযুক্তি, মেডিসিন, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ব্যবসায়িক শিক্ষায় এর গ্রহণযোগ্যতা সর্বোচ্চ। যারা ভবিষ্যতের প্রযুক্তি ও নেতৃত্বের পথে এগিয়ে যেতে চান, তাদের জন্য Stanford এক আদর্শ ঠিকানা।
ETH Zurich – Swiss Federal Institute of Technology
ETH Zurich ইউরোপের অন্যতম সেরা প্রযুক্তি-ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়, যা সুইজারল্যান্ডের জুরিখে অবস্থিত। এটি উচ্চমানের গবেষণা, উদ্ভাবনী চিন্তা এবং টেকসই প্রযুক্তির জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। পদার্থবিজ্ঞান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পরিবেশবিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নানা শাখায় ETH Zurich অসাধারণ অবদান রাখছে।
নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন এখানকার একজন গর্বিত প্রাক্তন শিক্ষার্থী, যা এর গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে। ২০২৫ সালের QS র্যাঙ্কিং অনুযায়ী এটি বিশ্বে সপ্তম স্থানে অবস্থান করছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক শিক্ষার সুন্দর সমন্বয়।
ETH Zurich শুধু ইউরোপ নয়, পুরো বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ—কীভাবে প্রযুক্তিকে মানব কল্যাণে কাজে লাগানো যায়। যারা গবেষণাভিত্তিক শিক্ষায় আগ্রহী এবং নিরাপদ, উন্নত শিক্ষাব্যবস্থায় পড়তে চান, তাদের জন্য ETH Zurich নিঃসন্দেহে সেরা একটি পছন্দ।
National University of Singapore (NUS)
National University of Singapore (NUS) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অগ্রগণ্য বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছে। এটি প্রযুক্তি, মেডিকেল সায়েন্স, বিজনেস ও সমাজবিজ্ঞানে যুগোপযোগী শিক্ষা ও গবেষণার জন্য পরিচিত।
NUS শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শেখার সুযোগের পাশাপাশি শিল্প-প্রযুক্তির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করে দেয়। সিঙ্গাপুর সরকারের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়নের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। QS World University Rankings 2025 অনুযায়ী এটি বিশ্বের অষ্টম এবং এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্যতম।
NUS-এর বৈচিত্র্যময় শিক্ষা পরিবেশ, আন্তর্জাতিক ফ্যাকাল্টি ও গবেষণাগার শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় দক্ষ করে গড়ে তোলে। উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি চাকরি ও স্টার্টআপে সম্ভাবনা থাকায়, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে এটি এখন একটি কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।
University College London (UCL)
University College London (UCL) হলো একটি উদ্ভাবনী এবং গবেষণা-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, যা লন্ডনের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় ও আন্তঃবিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত। মেডিসিন, আইন, আর্কিটেকচার, পরিবেশবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান এবং আর্টস—প্রত্যেকটি বিষয়ে UCL-এর রয়েছে অগ্রণী অবদান।
QS World University Rankings 2025 অনুসারে এটি নবম স্থানে রয়েছে। UCL-এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো এর গবেষণা নেটওয়ার্ক এবং বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততা। এখানে পড়াশোনা মানেই শুধু সার্টিফিকেট অর্জন নয়, বরং সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের অংশ হওয়া।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বিস্তৃত স্কলারশিপ, উন্নত অবকাঠামো এবং এক সমৃদ্ধ শিক্ষাজীবনের অভিজ্ঞতা। লন্ডনের প্রাণবন্ত পরিবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক উৎকর্ষ UCL-কে করে তোলে এক অনন্য উচ্চতায়।
California Institute of Technology (Caltech)
California Institute of Technology (Caltech) হচ্ছে ছোট পরিসরের হলেও উচ্চমানের গবেষণা ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার এক শক্তিশালী কেন্দ্র। এটি এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হলেও, গবেষণা ও উদ্ভাবনে তাদের প্রভাব বিশাল।
পদার্থবিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানে Caltech-এর অবদান বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। NASA-এর জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি Caltech দ্বারা পরিচালিত, যা মহাকাশ গবেষণায় এই প্রতিষ্ঠানকে অনন্য করে তুলেছে।
২০২৫ সালের QS র্যাঙ্কিং অনুযায়ী এটি বিশ্বের দশম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে গবেষণাভিত্তিক শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক চর্চা ও বাস্তব জীবনের জটিল সমস্যা সমাধানে সক্ষম হয়ে ওঠে। যারা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বকে বদলাতে চায়, তাদের জন্য Caltech এক নির্ভরযোগ্য গন্তব্য।
Times Higher Education (THE) অনুযায়ী সেরা ১০ বিশ্ববিদ্যালয়
- University of Oxford – যুক্তরাজ্য
- Massachusetts Institute of Technology (MIT) – যুক্তরাষ্ট্র
- Harvard University – যুক্তরাষ্ট্র
- Princeton University – যুক্তরাষ্ট্র
- University of Cambridge – যুক্তরাজ্য
- Stanford University – যুক্তরাষ্ট্র
- California Institute of Technology (Caltech) – যুক্তরাষ্ট্র
- University of California, Berkeley – যুক্তরাষ্ট্র
- Imperial College London – যুক্তরাজ্য
- Yale University – যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান
বিশ্বের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর র্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক খ্যাতনামা শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন (THE)। প্রতি বছর প্রকাশিত এই আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একাডেমিক মান, গবেষণা, আন্তর্জাতিক অবদান এবং শিক্ষার গুণগত মানের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে।
২০২৫ সালের সংস্করণে একটি দুঃখজনক বাস্তবতা সামনে এসেছে—বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই শীর্ষ ৮০০-এর তালিকায় স্থান পায়নি। এটি দেশের উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে নতুন করে ভাবনার সুযোগ তৈরি করেছে। তবে আশার কথা, এই ৮০০-এর পরে ৮০১ থেকে ১২০০ পর্যন্ত পর্যায়ে রয়েছে দেশের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়, যা কিছুটা হলেও ইতিবাচক অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়।
৮০১-১০০০ র্যাঙ্কে জায়গা করে নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো:
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
- যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি
১০০১ থেকে ১২০০ রেঞ্জে রয়েছে:
- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)
- ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি
- চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)
- খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
- আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (AIUB)
- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
- রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)
- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
এছাড়াও, ১৫০০-এর পরে থাকা তালিকায় রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
এমন ফলাফল বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা খাতে গবেষণার মান, আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ এবং একাডেমিক অবকাঠামো উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা সামনে নিয়ে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বমানের র্যাঙ্কিংয়ে উঠে আসতে হলে গবেষণাভিত্তিক শিক্ষা, শিক্ষকের মানোন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে এখনই।