Metrorail Job Circular | মেট্রোরেল এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

Metrorail Job Circular, মেট্রোরেল এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৫।দেশের প্রথম আধুনিক মেট্রোরেল পরিচালনাকারী সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (DMTCL) নতুন জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তরুণ ও যোগ্য প্রার্থীদের জন্য এটি একটি চমৎকার কর্মসংস্থানের সুযোগ। রাজধানী ঢাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন প্রকল্পে কাজ করার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নযাত্রায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।

মেট্রোরেল এ নিয়োগের বিবরণ

ঢাকা মেট্রোরেলের আওতায় ২৪ ক্যাটাগরির পদে মোট ১২০ জন নিয়োগ দেওয়া হবে। পদের মধ্যে রয়েছে সহকারী ব্যবস্থাপক, নিরাপত্তা কর্মকর্তা, অর্থ কর্মকর্তা, জুনিয়র রাজস্ব কর্মকর্তা, অর্থ সহকারী, সেকশন ইঞ্জিনিয়ার, জুনিয়র মার্কেটিং অফিসার, পেশ ইমাম, মোয়াজ্জিন, সেমি স্কিলড মেইনটেইনার, সেমি স্কিলড মেশিন অপারেটর, সেমি স্কিলড ড্রাইভার। নিয়োগটি সম্পূর্ণ সরকারি বিধিমালানুযায়ী এবং সকল সুবিধা প্রদান সাপেক্ষে সম্পন্ন হবে।

পদের নাম

১. সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৫০,৬০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : সম্মান সহ স্নাতকোত্তর

২. সহকারী ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৫০,৬০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : সম্মান সহ স্নাতকোত্তর

৩. সহকারী ব্যবস্থাপক (এস্টেট/লিগ্যাল)

  • পদসংখ্যা: ০২
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৫০,৬০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : সম্মান সহ এল.এল.বি অথবা এল.এল.এম

৪. সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৫০,৬০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : সম্মান সহ স্নাতকোত্তর

৫. নিরাপত্তা কর্মকর্তা

  • পদসংখ্যা: ০৩
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : স্নাতক

৬. অর্থ কর্মকর্তা

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : বি.বি.এ

৭. জুনিয়র রাজস্ব কর্মকর্তা

  • পদসংখ্যা: ০২
  • মূল বেতন: মূল বেতন ২৫,৯৯০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : বি.বি.এ

৮. অর্থ সহকারী

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ২১,৩৯০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : এইচ.এস.সি

৯. সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (ইলেকট্রিক্যাল)

  • পদসংখ্যা: ০৫
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : ডিপ্লোমা

১০. পদের নাম: সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (সিগন্যালিং অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন)

  • পদসংখ্যা: ০৬
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : ডিপ্লোমা

১১. সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (আরএস প্ল্যানিং/ট্রেনিং/বাজেট)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : ডিপ্লোমা

১২. সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (আরএ – স্পেশাল টাস্ক)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : ডিপ্লোমা

১৩. সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (আরএস এয়ারকন)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : ডিপ্লোমা

১৪. সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (আরএস ডোর)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : ডিপ্লোমা

১৫. সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (আরএস বগি)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : ডিপ্লোমা

১৬. সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (আরএস নিউম্যাটিকস)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : ডিপ্লোমা

১৭. সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (পি-ওয়ে)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : ডিপ্লোমা

১৮. সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (প্রকিউরমেন্ট)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ৩৬,৮০০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : ডিপ্লোমা

১৯. জুনিয়র মার্কেটিং অফিসার

  • পদসংখ্যা: ০২
  • মূল বেতন: মূল বেতন ২৫,৯৯০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : বি.বি.এ

২০. পেশ ইমাম

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ২৩,৪৬০ টাকা
  • বয়স : ৪০ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : কামিল / দাওরায়ে হাদিস

২১. মোয়াজ্জিন

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ২১,৩৯০ টাকা
  • বয়স :৩২বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : আলিম

২২. সেমি স্কিলড মেইনটেইনার

  • পদসংখ্যা: ৮০
  • মূল বেতন: মূল বেতন ২১,৩৯০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : এইচ.এস.সি (ভোকেশনাল)

২৩. সেমি স্কিলড মেশিন অপারেটর (রোলিং স্টক)

  • পদসংখ্যা: ০৪
  • মূল বেতন: মূল বেতন ২১,৩৯০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : এস.এস.সি

২৪. সেমি স্কিলড ড্রাইভার (সিএমভি)

  • পদসংখ্যা: ০১
  • মূল বেতন: মূল বেতন ২১,৩৯০ টাকা
  • বয়স : ৩২ বছর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : এস.এস.সি (ভোকেশনাল)

মেট্রোরেল নিয়োগে যেভাবে আবেদন করবেন

বাংলাদেশের যোগ্য ও স্থায়ী নাগরিকরা শুধুমাত্র অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন, আবেদন করতে হবে নির্ধারিত ওয়েবসাইট http://dmtcl.teletalk.com.bd -এ। উল্লেখ্য, অনলাইনের বাইরে অন্য কোনো মাধ্যমে আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। নিয়োগ ও আবেদন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানতে ভিজিট করুন এই লিংকে

আবেদন ফি

১ থেকে ৬ এবং ৯ থেকে ১৮ নম্বর পদের প্রার্থীদের জন্য টেলিটকের সার্ভিস চার্জসহ আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২২৩ টাকা। ৭ ও ১৯ নম্বর পদের জন্য প্রযোজ্য ফি ১৬৮ টাকা এবং ৮ ও ২০ থেকে ২৪ নম্বর পদের জন্য আবেদন ফি হিসেবে পরিশোধ করতে হবে মোট ১১২ টাকা, যা টেলিটকের মাধ্যমে পরিশোধযোগ্য।

আবেদনের শেষ সময়

৪ জুন, ২০২৫।

ঢাকা মেট্রোরেল

ঢাকা শহরের ঘনবসতি, যানজট ও সময় অপচয়ের দীর্ঘদিনের সমাধান হিসেবে ঢাকা মেট্রোরেল আজ এক অনন্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এই পরিবহন ব্যবস্থা কেবল একটি প্রকল্প নয়, বরং বাংলাদেশের নগর উন্নয়ন ও পরিবহন খাতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। রাজধানীর হাজারো মানুষ এখন প্রতিদিন স্বস্তিতে ও সময় বাঁচিয়ে যাতায়াত করতে পারছেন মেট্রোরেলের মাধ্যমে।

মেট্রোরেল প্রকল্পের সূচনা ও বাস্তবায়ন

ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক নাম ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (MRT)। এটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (DMTCL)। ২০১২ সালে সরকার “ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (DTCA)” এর অধীনে মেট্রোরেল প্রকল্পের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। দীর্ঘ পরিকল্পনা, জমি অধিগ্রহণ, নকশা ও নির্মাণ কাজ শেষে ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রথম দফায় MRT লাইন-৬ এর উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ধাপে ধাপে লাইন-৬ সম্প্রসারিত হয়ে ২০২৩ সালের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এই লাইনটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২১.২৬ কিলোমিটার, যাতে মোট ১৭টি স্টেশন রয়েছে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত এসব স্টেশনে রয়েছে এসকেলেটর, লিফট, টিকিট বুথ ও ডিজিটাল তথ্যসেবা।

প্রযুক্তি ও নিরাপত্তার সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা

ঢাকা মেট্রোরেল সম্পূর্ণরূপে ইলেকট্রিক ট্র্যাক সিস্টেম ব্যবহার করে পরিচালিত হয়, যার ফলে এটি পরিবেশবান্ধব ও শব্দদূষণহীন। ট্রেনগুলো চালিত হয় আধুনিক সিগন্যালিং সিস্টেমের মাধ্যমে এবং ট্রেন চলাকালে গতি, দূরত্ব ও সময় নির্ধারণ হয় সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে।

যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, স্বয়ংক্রিয় দরজা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং রেল স্টাফদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সিকিউরিটি টিম। পাশাপাশি রয়েছে ইলেকট্রনিক টিকিটিং (smart card), যা যাত্রীদের সুবিধাজনক যাত্রা নিশ্চিত করে।

মেট্রোরেল এর যাত্রীসেবা ও সময়সীমা

মেট্রোরেল সকাল ৭টা থেকে রাত ৯.৪০টা পর্যন্ত চালু থাকে। প্রতি ৮-১০ মিনিট পরপর ট্রেন ছাড়ে, ফলে যাত্রীদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় না। একটি ট্রেনে একসঙ্গে প্রায় ২০০০ যাত্রী পরিবহন সম্ভব,ঘন্টায় ৬০,০০০ যাত্রী যা ঢাকার চিরাচরিত গণপরিবহন ব্যবস্থার তুলনায় অনেক বেশি সুবিধাজনক।

ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে দূরত্ব অনুযায়ী, যেখানে সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। যাত্রীরা MRT Pass এবং Rapid Pass ব্যবহার করে ১০% ভাড়া ছাড়ে মেট্রোরেলে ভ্রমন করতে পারছে। এছাড়াও প্রতিটি স্টেশন থেকে সিংগেল এন্ট্রি টিকিট ক্রয় করে ভ্রমন করা যাচ্ছে। অফিস টাইমে টিকিট ক্রয় এর জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লাগতে পারে অনেক সময়। সেক্ষেত্রে MRT Pass এবং Rapid Pass ব্যবহার করা সুবিধাজনক।

ঢাকা মেট্রোরেলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকায় মোট ৬টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে MRT লাইন-১, লাইন-৫ ও লাইন-২ ইতোমধ্যেই পরিকল্পনায় রয়েছে এবং নির্মাণ কাজ শুরুর প্রস্তুতি চলছে। MRT লাইন-১ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেল স্টেশন পর্যন্ত যাবে এবং এটি হবে দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ (underground) মেট্রোরেল লাইন।

অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব

মেট্রোরেলের মাধ্যমে ঢাকার নাগরিকেরা যেমন সময় ও খরচ সাশ্রয় করছেন, তেমনি এটি শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য স্বস্তি এনে দিয়েছে। অফিসগামী কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও চিকিৎসা সেবাগ্রহীতারা এখন নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন। ফলে কাজের উৎপাদনশীলতা ও ব্যক্তিগত সময় ব্যবহারে উন্নতি এসেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মেট্রোরেল ঢাকায় ১০-১৫% যানজট হ্রাসে সহায়ক হয়েছে এবং এটি দেশের জিডিপিতে দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

ঢাকা মেট্রোরেল শুধু একটি উন্নয়ন প্রকল্প নয়, এটি দেশের ভবিষ্যৎ নগর পরিবহনের প্রতীক। বিশ্বমানের এই পরিবহন সেবা নগরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। সামনে আরও বিস্তৃত নেটওয়ার্ক ও আধুনিক সংযোগ নিয়ে ঢাকার মানুষের জন্য মেট্রোরেল হয়ে উঠবে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

Leave a Comment