থাইল্যান্ড ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশি সাধারণ পাসপোর্টধারীদের জন্য ই-ভিসা সুবিধা চালু করেছে। এই নতুন ব্যবস্থায়, বাংলাদেশিরা ঘরে বসেই অনলাইনে থাইল্যান্ড ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
১০ দিনেই মিলবে থাইল্যান্ডের ই-ভিসা
ঢাকায় অবস্থিত থাইল্যান্ড দূতাবাস জানিয়েছে, অনলাইনে আবেদন করার পর সর্বোচ্চ ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে ই-ভিসা প্রদান করা হবে। এই ই-ভিসা ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা সহজেই থাইল্যান্ডে প্রবেশ করতে পারবেন।
কীভাবে ই-ভিসার আবেদন করবেন?
ই-ভিসার জন্য প্রথমে অনলাইনে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এরপর আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে এবং প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী নির্ধারিত ফি অনলাইনে জমা দেওয়ার পর আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে। আবেদন সাবমিট করার ১০ দিনের মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে ভিসা পাওয়া যাবে।
থাইল্যান্ড ভিসার আবেদন করতে চাইলে যেতে হবে এই ওয়েবসাইটে।
গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর থেকে থাইল্যান্ড শুধুমাত্র বাংলাদেশের সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ই-ভিসা সুবিধা চালু করেছে এবং ২৪ ডিসেম্বর থেকে ঢাকার থাইল্যান্ড ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
থাইল্যান্ড ইতোমধ্যেই বিশ্বের ৬৯টি দূতাবাসে ই-ভিসা সুবিধা চালু করেছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই উদ্যোগ ভ্রমণকে আরও সহজ এবং সুবিধাজনক করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
থাইল্যান্ড ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের আর দূতাবাসে সরাসরি আবেদন করতে হবে না। সম্প্রতি থাই সরকার বাংলাদেশিদের জন্য ইলেকট্রনিক ভিসা (ই-ভিসা) সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছে। এই সুবিধার মাধ্যমে ভ্রমণকারীরা ঘরে বসেই অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
থাইল্যান্ডের ই-ভিসা সেবা চালুর ফলে আবেদন প্রক্রিয়া অনেক সহজ এবং সময় সাশ্রয়ী হবে। ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য আর দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে না, বরং দ্রুত এবং সহজ উপায়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে অনুমোদন পাওয়া যাবে।
থাই সরকারের মতে, এই নতুন উদ্যোগ বাংলাদেশি পর্যটক, ব্যবসায়ী এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ই-ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে আগ্রহী ব্যক্তিরা থাই ই-ভিসার নির্ধারিত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং কাগজপত্র জমা দিতে পারবেন। সফল আবেদনকারীরা তাদের ভিসার ইলেকট্রনিক কপি ইমেইলের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন, যা ভ্রমণের সময় দেখানোর জন্য যথেষ্ট।
থাইল্যান্ডের এই নতুন সুবিধা বাংলাদেশের পর্যটন খাত এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।
ই-ভিসার সুবিধা
- সহজ প্রক্রিয়া: ই-ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করা যায়, যা সময় ও শ্রম বাঁচায়।
- দ্রুত অনুমোদন: সাধারণত ই-ভিসার অনুমোদন প্রক্রিয়া দ্রুততর হয়, ফলে ভ্রমণকারীরা সহজেই ভিসা পেতে পারেন।
- ডকুমেন্ট আপলোড: পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় নথি অনলাইনে আপলোড করার সুবিধা থাকায় সরাসরি দূতাবাসে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
- খরচ সাশ্রয়ী: ই-ভিসার জন্য আবেদন ফি তুলনামূলকভাবে কম এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচও হ্রাস পায়।
- অনলাইন ট্র্যাকিং: ভিসার আবেদন স্ট্যাটাস অনলাইনে ট্র্যাক করা যায়, যা আবেদনকারীদের জন্য আরও সুবিধাজনক।
- মাল্টিপল এন্ট্রি সুবিধা: অনেক দেশ ই-ভিসার মাধ্যমে মাল্টিপল এন্ট্রি সুবিধা প্রদান করে, যা বারবার ভ্রমণের জন্য সহায়ক।
- বিশেষ সুবিধা: ই-ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্দিষ্ট দেশগুলো ভ্রমণের জন্য ভিসা-মুক্ত প্রবেশ বা সীমিত সময়ের জন্য ভিসার শর্ত ছাড়ের সুবিধা দেওয়া হয়।
- আন্তর্জাতিক যোগাযোগ সহজতর: ই-ভিসা প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক ভ্রমণ সহজতর করে, যা পর্যটন ও ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে অত্যন্ত কার্যকর।
- সময়মতো তথ্য হালনাগাদ: ই-ভিসা প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ পাওয়া যায়।
- পরিবেশবান্ধব: প্রিন্টেড নথির প্রয়োজন কম থাকায় ই-ভিসা পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব।
থাইল্যান্ড ভ্রমণ টিপস
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় গন্তব্যের তালিকায় শীর্ষে থাকা থাইল্যান্ড শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য নয়, বরং এর নগরজীবনের অনন্য প্রাণচাঞ্চল্যের জন্যও বিখ্যাত। প্রতিটি ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এটি যেন এক স্বপ্নের দেশ।
এয়ার টিকিট
বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ড যাত্রার জন্য বিমানই একমাত্র মাধ্যম। সাশ্রয়ী খরচে ভ্রমণ নিশ্চিত করতে ফ্লাইটের টিকিট কাটার সময় কিছু বিষয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। বিভিন্ন এয়ারলাইনসের টিকিটের দাম তুলনা করে নিজের জন্য সবচেয়ে উপযোগী ফ্লাইট বেছে নিন। তবে শেষ মুহূর্তে টিকিট কাটার ঝুঁকি না নিয়ে অন্তত দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে বুকিং করা উত্তম। এতে খরচ কমার পাশাপাশি ফ্লাইট না পাওয়ার শঙ্কাও থাকবে না।
হোটেল বুকিং
থাইল্যান্ডে থাকার জায়গা খুঁজে পাওয়া এখন আর কোনো কঠিন কাজ নয়। অনলাইনে হোটেল বুকিং করা কিংবা ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব। বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য ব্যাংককের সুকুমবিত এলাকার ১১ নম্বর রাস্তাটি বেশ জনপ্রিয়। এখানে স্ট্রিট ফুডের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে, পাশাপাশি কাছেই মার্কেট এবং মেট্রোরেল স্টেশনও রয়েছে, যা যাতায়াত খরচ কমিয়ে দেয়।
খাবার
থাইল্যান্ডের খাবারের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। তাদের রান্নায় ঝালের আধিক্য এবং বিভিন্ন মসলার সৃজনশীল ব্যবহার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয় টম ইয়াম স্যুপ একটি অবশ্যই চেষ্টা করে দেখার মতো খাবার। সামুদ্রিক মাছের স্বাদে ভরপুর এই মশলাদার স্যুপটি অনন্য। যারা কম ঝাল পছন্দ করেন, তাদের জন্য টম খা গাই একটি ভালো বিকল্প। নারকেল দুধ দিয়ে তৈরি এই খাবারে সাধারণত মুরগির মাংস কিংবা মাছ ব্যবহার করা হয়।