আয়তনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০ টি দেশের তালিকা

আয়তনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০টি দেশের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে রাশিয়া। পৃথিবীতে বর্তমানে স্বাধীন দেশের সংখ্যা ১৯৫টি। প্রতিটি দেশের আয়তনের দিক থেকে পার্থক্য রয়েছে। এর মধ্যে যেমন কিছু দেশের আয়তন অতি ক্ষুদ্র, তেমনি কিছু দেশ আবার আয়তনে অনেক বিশাল। আয়তনের ভিত্তিতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০টি দেশের নাম, আয়তন, জনসংখ্যা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আজকে আমরা জানবো।

দেশ গুলোর নাম ক্রমানুসারে

  • রাশিয়া
  • কানাডা
  • যুক্তরাষ্ট্র
  • চীন
  • ব্রাজিল
  • অস্ট্রেলিয়া
  • ভারত
  • আর্জেন্টিনা
  • কাজাখস্থান
  • আলজেরিয়া

১০. আলজেরিয়া

আলজেরিয়া দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকায় ভূমধ্যসাগরের দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত। আলজেরিয়ার আয়তন ২৩ লাখ ৮১ হাজার ৭৪১ বর্গকিলোমিটার। আয়তনের দিক দিয়ে এটি বিশ্বের দশম বৃহত্তম দেশ। এটি আফ্রিকা মহাদেশের বৃহত্তম দেশ।

আলজেরিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৩৬ লাখ। জনসংখ্যার ঘনত্ব এখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৪৬ জন। দেশটির উপকূলরেখার দৈর্ঘ্য ৯৯৮ কিলোমিটার। দেশের আয়তনের প্রায় ৯০ শতাংশ মরুভূমি। ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত আলজিয়ার্স দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী।

৯. কাজাখস্থান

আয়তনে পৃথিবীর নবম বৃহত্তম দেশ কাজাখস্থান। এই দেশটির মোট আয়তন ২৭ লক্ষ ২৪ হাজার ৯০০ বর্গ কিলোমিটার। কাজাখস্তান এর রাজধানীর নাম নূর সুলতান।

বর্তমানে এই দেশের জনসংখ্যা প্রায় এক কোটি ৯৬ লক্ষ। এই দেশের আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক অংশে কম। এছাড়াও বিশ্বের অন্যতম সুন্দর ও আকর্ষণীয় দেশ গুলোর মধ্যে এটি অন্যাতম। একই সাথে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্থলভুমি বেষ্টিত দেশ। এর আয়তন পশ্চিম ইউরোপের আয়তনের সমতুল্য।

কাজাখস্তান প্রায় সম্পূর্ণভাবে এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত। তবে দেশটির অল্প কিছু অংশ ইউরোপ মহাদেশে পড়েছে। এই দেশটিতে বিশাল স্থল ও উচ্চভূমি রয়েছে। দেশের মূল আবহাওয়া শীতল ও শুষ্ক। তবে এটি পুরোপুরি মরুভূমির মতো নয়। আবার পার্শ্ববর্তী দেশ রাশিয়ার মতো অতো ঠান্ডাও নয়। ১৯২২ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

৮. আর্জেন্টিনা

আয়তনের ভিত্তিতে সবচেয়ে বড় দেশের তালিকায় দক্ষিণ আমেরিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আর্জেন্টিনা। সারা বিশ্বে আর্জেন্টিনার অবস্থান আয়তনের দিক দিয়ে অষ্টম স্থান।

দেশটির মোট আয়তন প্রায় ২৭ লক্ষ ৮০ হাজার ৪০০ বর্গ কিলোমিটার। দেশটির রাজধানীর নাম হচ্ছে বুয়েনোস আইরেস।দেশটির রাজধানী সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত।

আর্জেন্টিনার বর্তমান জনসংখ্যা আনুমানিক ৪.৫ কোটি বা ৪৫ মিলিয়ন। এটি দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম বৈচিত্র্যময় দেশ, যেখানে রয়েছে আন্দেস পর্বতমালা, বিস্তীর্ণ তৃণভূমি (পাম্পাস) এবং বিশাল প্যাটাগোনিয়া মরুভূমি।

জলবায়ুর দিক থেকে দেশটি বিভিন্ন ধরনের আবহাওয়ার সম্মিলন ঘটিয়েছে—উত্তরাঞ্চলে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়া বিরাজ করে, আর দক্ষিণ অংশে শীতল জলবায়ু বিদ্যমান।

৭. ভারত

বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম দেশ ভারতের মোট আয়তন ৩২,৮৭,২৬৩ বর্গকিলোমিটার। দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত এই দেশ জনসংখ্যার দিক থেকে শীর্ষস্থানে রয়েছে।

বর্তমানে ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটি, যা এটিকে বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লি, আর বৃহত্তম শহর হলো মুম্বাই।

ভারত ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিকভাবে অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় একটি দেশ। এই দেশের উত্তরে হিমালয়ের বরফে ঢাকা পর্বতমালা থেকে শুরু করে পশ্চিমে রয়েছে মরুভূমি। এছাড়াও গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের উর্বর সমভূমি এবং দক্ষিণ দিকে বিস্তৃত সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিভিন্ন ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।

ভারত বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতাগুলোর মধ্যে একটি। এখানে বহু ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতি একসাথে অবস্থান করে। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ নানা ধর্মের মানুষ এখানে একসাথে বসবাস করে। দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির দেশ হিসেবে ভারত প্রযুক্তি, কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

৬. অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়া পৃথিবীর মধ্যে ষষ্ঠ বৃহত্তম দেশ। দেশটির আয়তন ৭৬ লক্ষ ৯২ হাজার ২৪ বর্গ কিলোমিটার। এই দেশটির অবস্থান প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরের মাঝামাঝি। অস্ট্রেলিয়া একটি মহাদেশীয় রাষ্ট্র।

বর্তমানে দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ২.৬ কোটি। এর রাজধানী ক্যানবেরা হলেও, সবচেয়ে জনবহুল শহর হলো সিডনি।

অস্ট্রেলিয়ার ভূপ্রকৃতিতে রয়েছে বৈচিত্র্যের ছোঁয়া—প্রশস্ত মরুভূমি, সবুজ বনাঞ্চল, সুউচ্চ পর্বতমালা ও দীর্ঘ উপকূলরেখা। এখানে অবস্থিত গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর, যা পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ।

দেশটির অর্থনীতি মূলত খনিজসম্পদ, কৃষি, পর্যটন ও প্রযুক্তিনির্ভর। অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতি ইউরোপীয় ঐতিহ্য ও আদিবাসী সংস্কৃতির মিশ্রণে গঠিত। ক্রীড়া ও আউটডোর কার্যকলাপ এখানকার মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, যেখানে ক্রিকেট, রাগবি ও ফুটবল বিশেষ জনপ্রিয়।

৫. ব্রাজিল

ব্রাজিল দক্ষিণ আমেরিকার সর্ববৃহৎ দেশ। সারা পৃথিবীর মধ্যে আয়তনের দিক দিয়ে এটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম। এই দেশের মোট আয়তন প্রায় ৮৫ লক্ষ ১৫ হাজার ৭৬৭ বর্গকিলোমিটার।

দেশটির জনসংখ্যা বর্তমানে আনুমানিক ২১ কোটি, যা এটিকে বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত করেছে। যদিও রাজধানী ব্রাসিলিয়া, তবে দেশটির সবচেয়ে জনবহুল শহর হলো সাও পাওলো।

ব্রাজিলের বিশাল অংশজুড়ে রয়েছে আমাজন রেইনফরেস্ট, যা বিশ্বের বৃহত্তম গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনভূমি এবং বিপুল বৈচিত্র্যময় প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল। দেশের অর্থনীতি মূলত কৃষি, খনিজসম্পদ, শিল্প এবং পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল।

ফুটবল ব্রাজিলের সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, এবং দেশটি ফিফা বিশ্বকাপে সবচেয়ে সফল দলগুলোর মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও, ব্রাজিল বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত এর বর্ণাঢ্য কার্নিভাল উৎসব, সুরের মূর্ছনা ও প্রাণবন্ত নৃত্যশৈলীর জন্য।

৪. চীন

বিশ্বে আয়তনের দিক থেকে চীন এর অবস্থান ৪র্থ। চীনের মোট আয়তন ৯৫ লক্ষ ৯৬ হাজার ৯৬১ বর্গকিলোমিটার। এটি এশিয়ার সবচেয়ে বড় দেশ । চীন পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ এবং জনসংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটি।

দেশটি সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ, যা চীনকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান এবং প্রভাবশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

চীনের রাজধানী বেইজিং এবং বৃহত্তম শহর সাংহাই। চীনের ভূগোল অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়, যেখানে রয়েছে পাহাড়, সমুদ্রের তীর, মরুভূমি এবং ঘন বনভূমি। চীনের প্রাচীন সভ্যতা এবং সংস্কৃতি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন এবং এতে রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ, প্রাসাদ, মন্দির এবং অন্যান্য ঐতিহ্য।

৩. যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের থেকে আয়তনে কিছুটা বড়। এই দেশের মোট আয়তন প্রায় ৯৮ লক্ষ ৩৩ হাজার ৫৩০ বর্গ কিলোমিটার।মহাদেশীয় যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা অতি বিস্তৃত। এর বিস্তৃতি আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত। উত্তরে কানাডা থেকে দক্ষিনে মেক্সিকো পর্যন্ত এই দেশ বিস্তৃত।

যুক্তরাষ্ট্র সমগ্র পৃথিবীর মধ্যে রাজনৈতিক অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে প্রভাবশালী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র। এই দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৩৩৩ মিলিয়ন। জনসংখ্যার দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর তৃতীয় সর্বোচ্চ।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন, ডি.সি., এবং এর বৃহত্তম শহর নিউ ইয়র্ক সিটি।

আয়তনের ভিত্তিতে এই দেশের বৃহত্তম অঙ্গরাজ্য হচ্ছে আলাস্কা। এছাড়াও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জসহ বিচ্ছিন্ন অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূমি এই রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত। কেবলমাত্র স্থলভাগের দিক দিয়ে চিন্তা করলে যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র।

২. কানাডা

কানাডা উত্তর আমেরিকার বৃহত্তম দেশ এবং ভৌগোলিক আয়তনের দিক থেকে এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র। বিস্তীর্ণ ভূমি, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য, বৈচিত্র্যময় জলবায়ু এবং সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এই দেশটিকে বিশেষভাবে আলাদা করে তুলেছে।

দেশটির মোট আয়তন ৯,৯৮৪,৬৭০ বর্গকিলোমিটার, যা একে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ভূখণ্ডের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কানাডা পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগর থেকে পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত, পাশাপাশি উত্তরে আর্কটিক মহাসাগরকেও স্পর্শ করে। এ কারণে এটি একমাত্র দেশ যা একসঙ্গে তিনটি মহাসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে বিস্তৃত।

প্রশাসনিক কাঠামোর দিক থেকে কানাডা ১০টি প্রদেশ (Province) ও ৩টি অঞ্চল (Territory) নিয়ে গঠিত।

প্রশস্ত ভৌগোলিক পরিসরের তুলনায় কানাডার জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। ২০২৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩৯ মিলিয়ন। প্রতি বর্গকিলোমিটারে গড়ে ৪ জন বসবাস করে, যা বিশ্বের অন্যতম নিম্ন জনসংখ্যার ঘনত্বের দেশগুলোর মধ্যে একটি।

বৃহৎ ভূখণ্ডজুড়ে কানাডার জলবায়ু ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ব্যাপকভাবে পরিবর্তনশীল। দক্ষিণাঞ্চলে চারটি ঋতু পরিলক্ষিত হলেও, উত্তরাঞ্চলে দীর্ঘ ও তীব্র শীত বিদ্যমান। রকি পর্বতমালা, গ্রেট লেকস, হাডসন বে এবং সুবিস্তৃত বনাঞ্চল কানাডার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পরিবেশগত সমৃদ্ধিকে অনন্য মাত্রা দিয়েছে।

১. রাশিয়া

রাশিয়া আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ, যার বিস্তৃতি ইউরোপ ও এশিয়া জুড়ে। দেশটির মোট আয়তন ১৭,০৯৮,২৪৬ বর্গকিলোমিটার, যা পুরো বিশ্বের ভূমির প্রায় ১১%।

এর বিশাল ভৌগোলিক পরিসরের কারণে রাশিয়ায় একাধিক টাইমজোন এবং বৈচিত্র্যময় জলবায়ু দেখা যায়, যেখানে শীতপ্রধান সাইবেরিয়া থেকে শুরু করে তুলনামূলক উষ্ণ কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত।

রাশিয়ার রাজধানীর নাম হচ্ছে মস্কো। মস্কো ইউরোপের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

প্রাকৃতিক সম্পদের দিক থেকে দেশটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ, বিশেষ করে তেল, গ্যাস, কয়লা এবং খনিজ সম্পদে বিশ্বে অন্যতম শীর্ষস্থানীয়। অর্থনীতি, সামরিক শক্তি ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে রাশিয়ার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।

বহুমুখী সংস্কৃতি, সাহিত্য, সঙ্গীত ও ঐতিহ্যের জন্য রাশিয়া বিশ্বব্যাপী পরিচিত, যেখানে লিও টলস্টয়, দস্তয়েভস্কি ও চেখভের মতো লেখকরা বিশ্বসাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

Leave a Comment