ডাক বিভাগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি (Post Office Job Circular) পোস্টমাস্টার জেনারেলের কার্যালয়, পূর্বাঞ্চল, চট্টগ্রাম নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ১২টি ভিন্ন ক্যাটাগরির পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে মোট ৫২৪ জন জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের (সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর ও ধর্মপাশা উপজেলা ব্যতীত) স্থায়ী বাসিন্দারা এসব পদে আবেদন করতে পারবেন।
ডাক বিভাগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিবরণ
পোস্টম্যান
পদসংখ্যা: | ১৯০ |
যোগ্যতা: | এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএ। |
বেতন স্কেল: | ৯,০০০-২১,৮০০ টাকা |
গ্রেড : | ১৭ |
স্ট্যাম্প ভেন্ডার
পদসংখ্যা: | ৩ |
যোগ্যতা: | এসএসসি বা সমমান পাস। সংশ্লিষ্ট কাজে তিন বছরের অভিজ্ঞতা। |
বেতন স্কেল: | ৮,৮০০-২১,৩১০ |
গ্রেড : | ১৮ |
ওয়্যারম্যান
পদসংখ্যা: | ০১ |
যোগ্যতা: | এসএসসি বা সমমান পাস এবং ইলেকট্রিক ট্রেড কোর্সে বি/সি ক্যাটাগরির লাইসেন্স। |
বেতন স্কেল: | ৮,৫০০-২০,৫৭০ টাকা |
গ্রেড: | ১৯ |
আর্মড গার্ড
- পদসংখ্যা: ৫
- যোগ্যতা: এসএসসি বা সমমান পাস এবং অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
- বেতন স্কেল: ৮,৫০০-২০,৫৭০ টাকা (গ্রেড-১৯)।
প্যাকার কাম মেইল ক্যারিয়ার
- পদসংখ্যা: ১২৩
- যোগ্যতা: এসএসসি বা সমমান পাস।
- বেতন স্কেল: ৮,৫০০-২০,৫৭০ টাকা (গ্রেড-১৯)।
অফিস সহায়ক (এমএলএসএস)
- পদসংখ্যা: ২৩
- যোগ্যতা: এসএসসি বা সমমান পাস।
- বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০)।
গার্ডেনার
পদসংখ্যা: ৫
যোগ্যতা: অষ্টম শ্রেণি বা সমমান উত্তীর্ণ, বাগান পরিচর্যার অভিজ্ঞতা।
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০)।
পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সুইপার)
পদসংখ্যা: ১১
যোগ্যতা: অষ্টম শ্রেণি বা সমমান উত্তীর্ণ।
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০)।
বার্তাবাহক
পদসংখ্যা: ২
যোগ্যতা: এসএসসি বা সমমান উত্তীর্ণ।
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০)।
রানার
পদসংখ্যা: ১৩১
যোগ্যতা: এসএসসি বা সমমান উত্তীর্ণ, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০)।
বোটম্যান
পদসংখ্যা: ৩
যোগ্যতা: এসএসসি বা সমমান উত্তীর্ণ, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০)।
নিরাপত্তা প্রহরী
পদসংখ্যা: ২৭
যোগ্যতা: এসএসসি বা সমমান উত্তীর্ণ, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০)।
বয়সসীমা
২০২৫ সালের ১১ জানুয়ারি প্রার্থীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে।
আবেদন পদ্ধতি
আগ্রহী প্রার্থীরা এই (pmgec.teletalk.com.bd) ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে ফরম পূরণের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের সময়সীমা ১২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ বিকেল ৫টা পর্যন্ত। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন ডাক অধিদপ্তর এর ওয়েবসাইট https://www.bdpost.gov.bd/
আবেদন ফি
ফরম পূরণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ৫০ টাকা পরীক্ষা ফি এবং ৬ টাকা টেলিটক সার্ভিস চার্জসহ মোট ৫৬ টাকা জমা দিতে হবে।
নিয়োগ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য এবং আবেদন প্রক্রিয়া জানতে ভিজিট করুন উপরের লিংক।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ
এক সময়ের চিঠি আদান-প্রদানের মূল মাধ্যম হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ ডাক বিভাগ আজ ডিজিটাল যুগেও সমান গুরুত্ব বহন করছে। প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে দেশব্যাপী জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করছে এই প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু চিঠি নয়, আর্থিক লেনদেন, পার্সেল সেবা ও ডিজিটাল ডাকঘরের মাধ্যমে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ একটি ঐতিহ্যবাহী যোগাযোগ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, যা দীর্ঘদিন ধরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ডাক সেবা পৌঁছে দিয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি দেশের জনগণের কাছে সুলভ, দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
ঐতিহ্যের ধারায় আধুনিকতার সংযোজন
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ দীর্ঘকাল ধরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানে দক্ষতা অর্জন করেছে। দেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে বিস্তৃত এর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জনগণের কাছাকাছি পৌঁছাতে পেরেছে। আধুনিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী সেবার মাধ্যমে এটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী ও কার্যকর সেবা নিশ্চিত করছে।
সেবা কার্যক্রম ও লক্ষ্য
ডাক বিভাগের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে চিঠি ও পার্সেল পরিবহন, আর্থিক লেনদেন, সঞ্চয় ব্যাংক সেবা, এবং ই-কমার্স পণ্য পরিবহন। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে এটি স্বল্প খরচে সেবা প্রদান করে। এছাড়া, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নতুন সংযোজনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি আধুনিক সেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রূপকল্প ২০২১ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ডাক বিভাগের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় “ডিজিটাল বাংলাদেশ” বাস্তবায়নে অবদান রেখে চলেছে। এর আধুনিক সেবা কার্যক্রম এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এটি দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মতোই অগ্রগতির ধারায় রয়েছে।
গ্রামীণ উন্নয়নে অবদান
ডাক বিভাগ গ্রামীণ অঞ্চলে সাশ্রয়ী যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। এতে জনগণ শুধু যোগাযোগ নয়, আর্থিক লেনদেন ও অন্যান্য সেবা গ্রহণে দক্ষ হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ তার ঐতিহ্যের ধারায় আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে জনগণের জন্য নির্ভরযোগ্য ও কার্যকর সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
ইতিহাস ও কার্যক্রমের বিস্তার
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ব্রিটিশ আমলে, তবে স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালে এটি নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়। বর্তমানে এটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিসিএস BCS আবেদন করতে শারীরিক যোগ্যতা | উচ্চতা ও ওজন
দেশজুড়ে প্রায় ৯,৮০০টি পোস্ট অফিস এবং ১,৩০০+ ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস রয়েছে, যার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সেবা পেয়ে থাকে। ডাক বিভাগ শুধু পত্র ও পার্সেল পৌঁছে দেয় না, এটি সরকারের বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতা প্রদানেও সহযোগিতা করে।
ডাক বিভাগ এর সেবার পরিধি
বর্তমানে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ যে সেবা প্রদান করছে তা এক কথায় বিস্তৃত ও বহুমুখী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সেবাগুলো হলো:
- পত্র ও পার্সেল সার্ভিস
- রেজিস্ট্রি ও স্পিড পোস্ট সার্ভিস
- ইএমএস (Express Mail Service)
- পোস্টাল ক্যাশ কার্ড ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (বিপিএস)
- ডিজিটাল পোস্ট ই-কমার্স ডেলিভারি সার্ভিস
বিশেষ করে, ই-কমার্স ও অনলাইন কেনাকাটার প্রসারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ডাক বিভাগ পার্সেল ডেলিভারিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
ডিজিটাল সেবা ও প্রযুক্তি ব্যবহার
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা চালু করেছে। যেমন:
নগদ
ডাক বিভাগের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সরকার “নগদ” নামে একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (MFS) চালু করেছে যা বর্তমানে ব্যাপক জনপ্রিয়।
ডিজিটাল পোস্ট অফিস
দেশের ১০০টিরও বেশি পোস্ট অফিস ইতোমধ্যে ডিজিটালাইজড হয়েছে যেখানে অনলাইনে ট্র্যাকিং, রেজিস্ট্রেশন, ফি প্রদান ইত্যাদি করা যায়।
ই-পোস্ট সেবা
যেখানে কোনো ব্যক্তি ইলেকট্রনিক মাধ্যমে তার বার্তা পাঠাতে পারে এবং ডাক বিভাগ তা প্রিন্ট করে প্রাপকের ঠিকানায় পৌঁছে দেয়।
সামাজিক নিরাপত্তা ও ব্যাংকিং সেবা
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ সরকারের বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচির আওতায়:
- বয়স্ক ভাতা
- বিধবা ভাতা
- বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা
- দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি
এসব ভাতার টাকা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরাসরি প্রাপকদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছে। এছাড়াও, ডাক জীবন বীমা ও সঞ্চয়ী হিসাব এর মতো আর্থিক সেবাও দীর্ঘদিন ধরে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে।
চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ বর্তমানে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে যেমন:
- বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসের প্রতিযোগিতা
- অবকাঠামোগত উন্নয়নের ঘাটতি
- জনবল ও আধুনিক প্রশিক্ষণের অভাব
তবে বর্তমান সরকার ও ডাক বিভাগ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ডাক বিভাগকে আরও আধুনিক ও গতিশীল করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী যোগাযোগ মাধ্যম হলেও এখন এটি ডিজিটাল যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক সেবায় রূপান্তরিত হচ্ছে। সেবার বহুমুখীকরণ, ই-কমার্স ডেলিভারি, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠান আবারও জনগণের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট।
ডাক বিভাগ শুধু পত্র নয়—এটি এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার। রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ হলে, এটি গ্রামীণ অর্থনীতি ও যোগাযোগে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে।